ভ্রমণ কাহিনী ~ মা আনন্দময়ী তলা !

কৃষ্ণনগর আনন্দময়ী তলা  এখানে খুব সুন্দর একটি মন্দির আছে,  না না কৃষ্ণনগরে একটি না ।  আমাদের নবদ্বীপ থেকে বাসে গেলে এক ঘন্টা আর ট্যাক্সি তে গেলে ৪৫, মিনিট সময় লাগে ।  আমরা এলাম সকল ১১ টায় কৃষ্ণনগরের  এক হোটেলের সামনে আমাদের গাড়ী দাড়ালো দেখি লেখা আছে  শিবম হোটেল, নামটা দেখে আমার  মনটা খুব খুশি হলো  আমি ভাবলাম বা  ভোলানাথ এর নাম,  বেশ  আমরা নেমে ভেতরে গেলাম  হোটেল ম্যানেজার বললো ৪০০~ ১২০০, টাকা পর্য্যন্ত রুম ভাড়া  দেওয়া হয় ।  আমরা রুম  বুক করে আবার বেরিয়ে পরলাম মায়ের মন্দিরে যাবার জন্য ।সবাই মিলে গেলালাম আমরা রাজবাড়ীর ডানদিকের রাস্তা ধরে  একটু  দূরে মন্দির, মায়ের মন্দিরে প্রবেশ করতেই সামনে এক বিরাট বলীর বেদী  এখন অবশ্য রাজার নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলি বর্তমানে আর হয় না ।  সম্মুখে মা আনন্দময়ী মাতা বিরাজমান বিরাট সেই কালো কষ্টি পাথরের মূর্তি মা যেনো সাক্ষাৎ জাজ্বল্যমান রূপে বসে আছেন শবশিবাশন , মায়ের পদ তলে ভোলানাথ শুয়ে আছে ।  মন্দিরের ডানদিকে ও বাম দিকে  নানান ঠাকুর ঘর  মায়ের  কাছে গিয়ে  মাকে প্রণাম করলাম  সব  চাদিরুপার ও সোনার গহনায়  ভরা  মায়ের  সর্ব  অঙ্গ ।  বিরাট একটা রুপোর  মুকুট মায়ের মাথায়  অপূর্ব শোভা লাগছে ,  হাস্য বদনা মা আমার সদা নন্দময়ী আনন্দময়ী ।  মায়ের বামদিকে বাইরের দেওয়ালে দেখি এক রাজার ফটো সোনালী ফ্রেমে বাঁধানো  জিজ্ঞেস করে জানলাম  ইনি হলেন এই মা আনন্দময়ী  মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা  এই কৃষ্ণনগরের মহারাজ  কৃষ্ণ চন্দ্র দে  রায় বাহাদুর,  তার পর গেলাম  পাশ দিয়ে উঠে একটু সিড়ি দিয়ে উপরে গিয়ে দর্শন করলাম শিব ভৈরব উমানন্দ কে ।  বিরাট কালো কষ্টি পাথরের শিব মূর্তি  ভারী সুন্দর , মাকে পূজো দিয়ে দর্শন করে আমরা ফিরে এলাম হোটেলে দুপুর ২ টো হবে ।

       খাবারের  ব্যবস্থা  খুব  ভালো   দুপুরের   লাঞ্চ টা  সেরে নিলাম  ,  খুব তৃপ্তি দায়োক  আহার  হয়েছে  ।    এই  কৃষ্ণনগরের  মহারাজ   কৃষ্ণনগরে   জগদ্ধাত্রী  পুজোর   প্রথম  প্রচলন   করেন ,  এখানে   খুব  ধুম ধাম  করে   জগদ্ধাত্রী  পূজা অনুষ্ঠিত হয়  ।    ভীষণ  আনন্দ  হয়   তবে  এখানে   আদি  বুড়িমা   খুব জাগ্রত   যার  গায়ে   পরানো  হয়   কয়েক   কোটি   টাকার  গয়না   ।   অনেক বিখ্যাত  মন্দির  ও  গোপাল ভারের  বাড়ি   রাজার  পিসিমার  বাড়ি ,   গির্জ্জা  যিশুর  সেও  দেখেছি  ।   

        নবদ্বীপ এ   যে   নানান  দেবদেবীর   সহিয়ে  বিখ্যাত  রাস   হয়   সেটিও  এই  রাজা  কৃষ্ণ চন্দ্র  সৃষ্টি    করেছেন ,  বৃন্দাবনের  মতন   রাস  উৎসব  শুধু   রাধা  কৃষ্ণ  ও  সখীদের  নিয়ে   চক্রাকারে   সজ্জিত  করে  হতো  নবদ্বীপে  ।
          বলা বাহুল্য  সত্য কথা না বলে  পরা  যায় না    রাজা   প্রথমে   শাক্ত ধর্ম  নিয়ে  ছিলেন   বলে  খুব   বৈষ্ণব  বিদ্বেষী   ছিলেন   পরে   অবশ্য   বৈষ্ণব  হইয়া ছিলেন   এর  অনেক  ইতিহাস আছে  ।    বিশাল  রাজ  প্রাসাদ   অনেক  বিঘা   জমির   উপরে  ।   বর্তমানে  অনেকাংশ   ধ্বংশবসেশ   প্রায়  হইয়াছে ,  যাক  চারদিকে  অনেক  গাছ পালা  রয়েছে ।   
       রাজবাড়ীতে   এখনও  দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়    তখন  রাজ পরিবারের  সবাই   আসে   ।

      কৃষ্ণনগরের   মাটির  পুতুল   বিখ্যাত   আর   সর্পুরিয়া   খুব   বিখ্যাত   খেতেও  ভারী   সুন্দর।   হয়তো   আপনেরা  কেউ কেউ  ভাববেন   নবদ্বীপে  বাড়ি   কিন্তু   হোটেল  ভাড়া   নিল  কেমন  গিয়েও  তো  সেদিনই   আসা  যায়   হ্যাঁ,    আমরা   দুদিন   থাকার  জন্য    গিয়েছিলাম  তাই   নেওয়া   ।
      পরে   রাজার  দেওয়ান   তার   চন্দন  নগরে   এই   জগদ্ধাত্রী পূজা   চালু   করেন  ।

      নবদ্বীপের   মহাপ্রভুর   গৌরাঙ্গ দেবের   মন্দিরে   মাহাত্ম্য   সিদ্ধ  চৈতন্য দাস  বাড়ার   প্রভাবে   মুগ্ধ  হইয়া   মহারাজ   তার  কাছে   বৈষ্ণব ধর্ম   গ্রহণ  করেন   ।  


   হালিশহর   নিবাসী   মাতৃ সাধক  রাম প্রসাদ  সেনের   শ্যামা সঙ্গীতে  মুগ্ধ  হইয়া   মহারাজ   কৃষ্ণ চন্দ্র  তাকে  তিনশো  বিঘে  জমি  দান  করেন  ।   এইরকম  কৃষ্ণনগরের  অনেক   ঘটনা  আছে   যাই  হোক  ! 
      ভালো  লাগলে   flow করে   পাশে  থাকবেন   ধন্যবাদ  ।

          শ্রী কৃষ্ণ দাস সঞ্জয় শাস্ত্রী, নবদ্বীপ ধাম । 
ক্রমশঃ ~    আজ ১ লা  বৈশাখ  শুভ  নববর্ষের সকলকে  আন্তরিক ভালোবাসা 
 প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু  করলাম  !
আমার  ব্লগ  লেখা,   শুভ সকাল শুভ কামনা রইল আমার  শুভ  শনিবার  ১৪৩০ সন,   ১/১/৩০/   ইংরেজি  15th  April  2023,       জয়   শ্রী  গণেশ  দেব  গৌরী  প্রিয়  পুত্র   !  🙏🙏  

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

sanjaykumar goswam104@gmail.com

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি