রায় রামানন্দ মিলন ~

রায় রামানন্দ মিলন

মহাপ্রভু আর রামানন্দ র মিলন দক্ষিণ ভারতে ~ 

   শ্রী ধাম নবদ্বীপে রাধা কৃষ্ণ মিলিত তনু শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু দক্ষিণ ভারতে ভ্যমন কলে মহাপ্রভু অনেক ভক্ত কে উদ্ধার করেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ভক্ত হলেন শ্রী রায় রামানন্দ, এনি ছিলেন মহারাজের প্রধান মন্ত্রী ।  মহাপ্রভু নবীন সন্ন্যাসী কলি জীবের উদ্ধার লাগি গৌর হরি নিজ মা ও স্ত্রী কে পরিত্যাগ করে অল্প বয়োসে শ্রী কৃষ্ণ প্রেমে পাগল হয়ে নবদ্বীপ ছেড়ে চলেগেছেন, সবাইকে কাঁদিয়ে। প্রভুর ইচ্ছা ছিল বৃন্দাবনে যাবেন কিন্তু মায়ের আদেশে প্রভুর নীলা চলে বাস।  দক্ষিণে গোদাবরী নদী তীরে বসে আছেন প্রভু এমন সময় দেখলেন অনেক সৈন্য নিয়ে নানান বাদ্য সংযোগে খুব বিশিষ্ট কে আসছেন পালকি করে ।  তিনি নদীতে নেমে শ্বান সেরে উঠে এলেন এসে বিরাট এক অশ্বথ বিক্ষের নিচে এক জ্যোতির্ময় নবীন সন্ন্যাসী উপবেশন করে বসে আছেন। রামানন্দ তার কাছে গিয়ে সেই সন্ন্যাসী কে প্রণাম করলো, জিজ্ঞাসা করলো কে আপনি সন্ন্যাসী ? আমি এই রাজ্যের প্রধান মন্ত্রী । প্রভু আমি একজন সন্ন্যাসী ভিক্ষুক রামানন্দ, আপনি কি করে জানলেন আমার নাম ! আপনি কি আমাকে জানেন ? অবাক হইয়া বললো রামানন্দ, প্রভু বলেন আমি তোমার সব জানি কিন্তু তুমি আমায় ভুলে গেছো রায় । রায় আমার মন কৃষ্ণ কথা শোনার জন্য খুব লালায়িত তুমি আমাকে কৃষ্ণ কথা বলো। আমাকে সার্বভৌম বলে দিয়েছেন যে যদি কৃষ্ণ কথা শুনতে হয় তবে রামানন্দ র কাছে গিয়ে শোনো, তুমি দক্ষিণ ভারতে যাও । আমি তোমার কাছে এলাম রায়, কৃষ্ণ বিহনে আর প্রাণ রাখা যায় না বলো রায় কৃষ্ণ কথা শুনে প্রাণ যুরাই । রায়, বলো প্রভু কি শুনতে চাও ? 

  প্রভু কহে কি করিলে কৃষ্ণে ভক্তি হয় 
রায় কহে স্বধর্ম আচরণ করিলে কৃষ্ণে ভক্তি হয় ।
প্রভু কহে ইহ বাহ্য আগে কহ আর ।
রায় কহে জ্ঞান মিশ্র ভক্তি সর্ব সাধ্য সার,
প্রভু কহে ইহ বাহ্য আগে কহ আর ।
রায় কহে জ্ঞান শূন্য ভক্তি সর্ব সাধ্য সার,
প্রভু কহে ইহ হয় আগে কহ আর ।
রায় কহে শান্ত প্রেম সর্ব সাধ্য সার,
প্রভু কহে ইহ বাহ্য আগে কহ আর ।
রায় কহে দাস্য প্রেম সর্ব সাধ্য সার ,
প্রভু কহে ইহ হয় আগে কহ আর ।
রায় কহে সক্ষ প্রেম সর্ব সাধ্য সার,
প্রভু কহে ইহ উত্তম আগে কহ আর।
রায় কহে বাৎসল্য প্রেম সর্ব সাধ্য সার,
প্রভু কহে ইহ উত্তম আগে কহ আর।
রায় কহে কান্তা প্রেম সর্ব সাধ্য সার,
প্রভু কহে ইহ সর্ব উত্তম আগে কহ আর।

রায় কহে এর উপরে বুদ্ধির গতি নাহিক
আমার, কে তুমি এর উপরেও জানতে চাও আমায় বল একবার। তুমি তো সামান্য মানুষ মহ, যে কান্তা প্রেম ব্রজগপির সীমা শেষ আর তুমি সেই 
তারও আগে জানতে চাও ! বলো মরে কে তুমি ? তুমি কি আমার সেই ব্রজেন্দ্র নন্দন শ্রী কৃষ্ণ ! বলো বলো তুমি কে !
    তখন মহাপ্রভু আপন যুগল স্বরূপ দর্শন করলেন, রায় দর্শন করলেন গৌর
অঙ্গ হতে রাধা কৃষ্ণ দুই অঙ্গ হলো ।  রায় সেই যুগল রূপ দর্শন করে মূর্ছা গেলেন । প্রভু পদ্ম হস্ত পরশ করে রায়
রামানন্দ কে চেতন করলেন ,  রায় রামানন্দ উঠে বললেন ।
    পহেলে দেখিনু তোমায় সন্ন্যাসী স্বরূপ 
  এবে কেনো দেখি তোমায় শ্যাম গোপ রূপ,  রসরাজ ও মাহাভাব দুই এক রূপ । প্রভু বললেন রায় তুমি সেই বৃন্দাবনের শ্রীমতী রাধারাণীর সখী বিশাখা । রায়
বলেন প্রভু আমায় তুমি উদ্ধার করো ।
প্রভু বলেন রায় তুমি এখন বাসায় ফিরে
যাও, কৃষ্ণ তোমায় ঠিক কৃপা  করবে ।
      রামানন্দ রায় শ্রী কৃষ্ণ চৈতন্যদেব মহাপ্রভু কে প্রণাম করে বাসায় ফিরে গেলেন । 
এই ভাবে রায় রামানন্দ ভক্ত কে উদ্ধার করলেন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু দক্ষিণ ভারতে।
 রায় রামানন্দ মিলন( চৈতন্য চরিতামৃত)  
    
ক্রমশঃ ~ 

       শ্রী কৃষ্ণ দাস সঞ্জয় শাস্ত্রী, নবদ্বীপ ধাম !! 




মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

sanjaykumar goswam104@gmail.com

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রঘুনাথ দাস গোস্বামী

Ramayon Ki Mhima