বৈষ্ণব সার্বভৌম ব্রজ কুলো তিলক শ্রী সনাতন গোস্বামী পাদ

সনাতন  গোস্বামী পাদ  ইনি ছিলেন  বাংলা, বিহার  ও উড়ির্ষার  নবাব  হোসেন শাও এর   প্রধান মন্ত্রী  নবাব  তার নাম  দিয়েছিলেন  দাবিরখাস ,   ১৪০৭ শকাব্দের  আজ  থেকে  প্রায়  ৫৫০, শত বৎসর পূর্বের কথা  ইনি  চৈতন্য মহাপ্রভুর পার্ষদ  ছিলেন ।   গৌরের নবাব হুসেন শাহ  অনেক চেষ্টা করেও তাকে আর   ধরে রাখতে  পারল  না  প্রচুর অর্থের লোভ  দেখলেন  কিন্তু  তার মন পড়ে  আছে  শ্রী চৈতন্যের  চরণে যে,  একদিন কাউকে  কিছু  না বলে তিনি  রাতের  অন্ধকারে  পালিয়ে  গেলেন  চৈতন্য মহাপ্রভুর কাছে তাকে দশন ও প্রণাম করলেন আর প্রভু তাকে নিজের কাছে কিছুদিন পুরীতে রেখে উপদেশ শিক্ষা দিয়ে বললেন  সনাতন  তুমি বৃন্দাবনে  গিয়ে  ভজন  করো ।   আমি পরে বৃন্দাবনে  যাবো  প্রভুর  আদেশে  সনাতন পাদ  বৃন্দাবনে গিয়ে  কালিও দহে  যমুনার  তীরে  একটি  পাতার কুটির করে  তিনি  ভজন করেন ।  মাধুকরী ভিক্ষা  ও  যমুনার জল পান করে  জীবন ধারণ করে  থাকেন  তীব্র  ত্যাগ ও বৈরাগ্য  এবং পরনে  কৌপীন লেংটি  সম্বল  আর কিছু নেই  ও  বদনে  নিরন্তর  কৃষ্ণ নাম লীলা শরণ  করেন  প্রাণ রাধা কৃষ্ণের  ।  মদনমোহন এর সেবা  করেন   একদিন  শ্রী ভগবান গোবিন্দ বলেন সনাতন তুই বাগানের  শাক সেদ্ধ করে আমাকে ভোগ  দিস  একটু  লবণ তাতে  দিতে পারিস না  শুধু লবণ ছাড়া কি খাওয়া যায়  অল্প  লবণ তো দিতে পারিস,  সনাতন  বলে  যে আমি  ভিখারী  বৈষ্ণব  আমি  কোথায়  পাবো  আজ বলবে লবণ দে কাল  বলবে বিয়ে কর  সংসার কর  ওসব চলবে না   তোমার  লবণ তুমি  জোগাড় করে নাও  । 

      যমুনায়  চার জাহাজ  নুনের বস্তা বোঝাই  করে  এক  বণিক  সওদাগর   বানিজ্য  করতে  যাচ্ছিল  হঠাৎ তার  সব  জাহাজ  যুমুনার  জল কমে যাওয়ার  কারণে  মাটিতে  আটকে যায় ,  গ্রীষ্মকাল  কি আর করে  অনেক চেষ্টা  করে  কিন্তু  কোনো  ফল  হলো  না  সেই  বণিক  ব্রজবাসিদের কাছে গিয়ে বলল  সেই  কথা তারা বলে  আপনি  সনাতন গোস্বামী কে  বলুন  উনি  মহাত্মা  তিনিই  পারেন  আপনাকে   বাঁচাতে  বণিক  সনাতন পাদের  পায়ে গিয়ে ধরলেন  সনাতন বললেন  ঠিক আছে তুমি আমাকে তোমার  জাহাজের কাছে  নিয়ে  চলো  ।  বণিক সনাতন পাদ কে নিয়ে এলেন  সনাতন বনিকের জাহাজে   হাত দিয়ে  একটু  ঠেলে  দিলেন  অমনি  জাহাজ  চলতে  শুরু করলো, বানিজ্য করে  অনেক লাভ করে  ফিরে  কালিও দহে  মদনমোহন এর  মন্দির নির্মাণ  করে দেয়,  তার  সঙ্গে  কয়েক  বস্তা  লবনও  দিলেন  প্রণাম করে  চলে গেলো  বণিক ।  সনাতন দেখলেন তার লবণের ব্যাবস্থা  করলেন  গোবিন্দ   যার ভার তিনিই বহন  করে,   
      এক পরম শিব ভক্ত  অতি দরিদ্র  তার সংসার  চলে না  খুব কষ্ট  তার  প্রতিদিন  বাবা   ভোলানাথ এর  পূজো করে  আর বাবার কাছে। কেঁদে কেঁদে বলে  বাবা গো  আমি তোমার ছেলে তোমাকে ছাড়া আমি আর কিছু  জানি না ,  আমার এত অভাব  আমার সংসার চলে না  তুমি  রাজরাজেস্বর  আমার ভোলানাথ কিন্তু   আমার  এত কষ্ট  বাবা ।   পরম  করুণাময় শিবের দয়া  হলো রাতে স্বপ্নাদেশ করলেন  শিব  তুই বৃন্দাবনে  সনাতন গোস্বামীর কাছে যা  তাকে গিয়ে  আমার  কথা  বলবি ও তোকে  দেবে  ধন রত্ন,  শিব  ভক্ত  সকালে  ছুটে গেলেন  কালিও দহে  প্রণাম করে  সনাতন  কে  বললো  আমাকে  শিব  বাবা  বলেছে  আপনার কাছে  যে ধন   আছে  সেটি আমাকে  দিন ।  সনাতন  বললো  আমি  লেংটি ধারী  বাবাজী   আমি  কোথায় পাবো  না না  আমার  কাছে  কিছু  নেই ,  মনের  দুঃখে   ব্রাম্ভন   চলে গেলো  আর মনে ভাবলো  বাবা  কি  আমায়   মিথ্যা কথা বললো ?  সনাতন  পাদ  মনে চিন্তা করলেন বাবা শিব তো ঠিক বলেছে  আমি  একদিন   যমুনার  তীরে  ভ্রমণ  করতে করতে  একটি  পরশ পাথর মনি পেয়েছিলাম  হ্যাঁ মনে  পড়েছে উঠে গিয়ে ডাক দিলেন  ও  ব্রাম্ভন  শোনো  আছে আছে  এসো ফিরে  এলো  শিব ভক্ত  সনাতন বললো  আমি যেখানে  প্রস্রাব  করি  পাশে একটা  পরশ পাথর  মাটিতে পুঁতে  রেখেছি  যাও  তুমি তুলে নাও  ভক্ত সেটি  নিয়ে  যাচ্ছে  আর  মনে মনে ভাবছে  এই সাত রাজার ধন পরশ মনি যে  প্রস্রাবের  যায়গায় পুঁতে  রেখেছে   তাহলে  তার কাছে   এমন কি  এর  থেকেও  দামী  ধন সম্পদ  আছে  এই  ভেবে  সে  যমুনায় সেই  মনি টা ছুড়ে ফেলে দিল ।  

        ছুটে  গিয়ে  সেই  ভক্ত  সনাতন  গোস্বামীর  পা ধরে  বললেন   হে শ্রী পাদ   (  কোন ধনে হইয়া ধনী  মনিরে মানো না মনি,  সেই ধন কিঞ্চিৎ মাঙ্গী  আমি ।  )    দাও তোমার সেই ধন আমায় দাও  বাবা ,  সনাতন বাবা শিব তোমাকে সবার সেরা ধন  দান করলেন  যাও যমুনায়  স্বান  করে এসো ।  ভক্ত যমুনায়  স্বান করে এলে   সনাতন  তার কর্ণমুলে  কৃষ্ণ মন্ত্র  দীক্ষা ও  নাম দিলেন,  ব্রজে  ভজন করতে করতে  শিব ভক্ত হলো পরম  বৈষ্ণব   তিনি  শ্রী কৃষ্ণের  দর্শন  লাভ করে  ধন্য হয়ে গেলো  ।  তিনি  শ্রী কৃষ্ণ প্রেম ধন লাভ করলেন  যা  ধনী জগতে  শিরো মনি  মহাত্মা মহাপুরুষ  নামে  ক্ষাতি  হলো তার ।  এই  শিব ভক্তের  কাহিনী  ।।   

    এই  সনাতন  গোস্বামী  তার  ভাই  ছিলেন  রূপ  গোস্বামী  নবাব  হোসেন শহর  কর্মচারী  অর্থ মন্ত্রী  ,  নবাব নাম দেন  শাকর্মল্লিক ইনিও   চৈতন্য মহাপ্রভুর  কৃপা লাভ করেন ।    সনাতন  পাদ  খুব বৃদ্ধ হয়েছেন   আর  চলতে  পারেন না নিত্য তার  গিরীগবর্ধন  পরিক্রমা  করা  চাই   কিন্তু  গিরিরাজ  ৯, মাইল  বিস্তৃত  পর্বত   হাঁটতে পারে না  মনের  দুঃখে বসে  কাঁদছেন   গোবিন্দ   বললেন  সনাতন   এই  পাথরে  আমি আমার  পদ  চিহ্ন  করে  দিলাম  আজ  থেকে   তুই  এই  পাথরে   পরিক্রমা  করবি   এতেই   তোর   গোবর্ধন  পরিক্রমা  করা   পূর্ণ  হবে  ।   সেই  শ্রী কৃষ্ণের চরণ  চিহ্ন  আজও   বৃন্দাবনের   শ্রী জীব গোস্বামীর   সেবিত  শ্রী   রাধা দামোদর   মদিরে  পূজিত  হচ্ছেন ।  
এই  শ্রী জীব গোস্বামী হলেন  সনাতন গোস্বামীর ছোটো ভাই  অনুপমের  পুত্র এনি শ্রী বৃন্দাবনে  রাধা দামোদর মন্দির প্রতিষ্ঠা  করেন ।  সংক্ষেপে লিখলাম  পরিচয়  শ্রী সনাতন গোস্বামী পাদের  !    ক্রমশঃ ~  
     জয় ভক্ত বৈষ্ণবের জয়, জয় শ্রী  গৌর ভগবানের  জয় ! হরে কৃষ্ণ হরে রাম  !

        লেখক কবি সঞ্জয়  !  শুভ অক্ষয় তৃথিয়া  
৮ই বৈশাখ ১৪৩০,  2023/  Sunday । 
Flow করে  সঙ্গে থাকুন । 🙏🙏 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

sanjaykumar goswam104@gmail.com

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রঘুনাথ দাস গোস্বামী

Ramayon Ki Mhima