শ্রীমতী রাধারাণীর অভিসার ও শ্রী কৃষ্ণ দর্শন ~ ৩ য় ভাগ !

           শ্রীমদ্ভাগবত  পূর্বরাগ  ও অভিসার শ্রীমতী রাধারাণীর ভাগবতে বর্ণিত আছে  দ্বাপর
যুগে  ৫২৫০, বছর পূর্বে  শ্বয়ম ভগবান শ্রী কৃষ্ণ
নররুপে লীলা করে  লীলাময় ভগবান ।
        এইটি  মহারাসের  পূর্ব  অবস্থা  নাইকা  শ্রীমতী রাধারাণীর ,  নায়ক  ব্রজেন্দ্র নন্দন  শ্রী কৃষ্ণের  বিরহে  যেমন  একটি প্রেমিকা তার প্রাণ প্রিয়তম কে  না দেখে থাকতে পারে না ।
     ও তার সঙ্গে মিলনের জন্য সর্বদা  ব্যাকুল চিত্ত হইয়া থাকে, কিন্তু এই গভীর অন্তরের তার
প্রেমাসিক্ত উজ্জ্বল ভাবের কথা যেমন নাইকা অন্য কে বলতে পারে না ।  যদি না সে যোগ্য কোনো তার মনের  অবস্থা বুঝবার মতন  কোনো প্রিয় মরমিয়া  সখী   থাকে  তাকেই সে
তবে তার অন্তরের কথা প্রকাশ করে খুলে বলে 

        মনের ব্যাথা  অনেক টা  হাল্কা করে থাকে, শ্রীমতী রাধার  প্রীয় সখি ছিল  অষ্ট জন  এরা  খুব ভালো বন্ধু  ( বেস্ট ফ্রেন্ড ) রাধা  এদের কাছেই সব মনের কথা খুলে বলে ।  এ কথা কি  বলার কথা  অন্য  শুনলে  খারাপ  ভাববে,  তাই 
রাধা কাউকে বলতে পারে না   সে তার সব কথা  তার প্রিয়  বান্ধবীদের কেই  বলে ।   রাধা 
তার  নাগর কৃষ্ণ  কথা আলাপনে  ছিল  এমন
সময়  সংকেত পেলো  শ্রীমতী  বাঁশি বাজার  মিলনের  ইঙ্গিত  এসো  রাধা রাধা  বলে ,  তুমি

         কোথায় আছো  প্রনেস্বরী  রাধা ।  নাইকা রাধা হলো  পতের স্ত্রী  আর নায়ক  শ্যাম  সুন্দর
হলেন  পর পুরুষ  সেখানে  শ্বশুরবাড়ির চোখে
ধুলো দিয়ে  যখন তখন  অন্য পুরুষের  সঙ্গে মিলিত  হওয়া তো  খুব কঠিন  ও সমাজে অনেক বাধা ,  একমাত্র  তার সখিরাই  পারে
এই  মিলন  আকাঙ্খা কে  পূর্ণ করতে ।
     তাই সে বিলাপের  সুরে বললো  সখি রে আমি  এখন কি করবো  নাগর  তো  পুরুষ সে
সব সময়  সবার সঙ্গে মিলিত  হতে পারে , আমি
একজন  পর নারী  আমি কি করে  সব ফেলে কি করে সম্ভব হয়  আমার  প্রেমের  নাগরের  কাছে  ছুটে  যাবো  তোরা  আমায় বলে  দে সখি ।   কি করে  আমি তার  দেখা পাবো  ভাই  ( উজ্জ্বল নীল মনিতে  রূপ গোস্বামী  রাধা ও কৃষ্ণ
কে  নায়ক   আর  নাইকা  নামেই  উল্লেখ  করেছেন  )   সখিগণ  বললো  আগে তো  সাজু
গুজু কর,  তবে  তুই  আমাদের  সঙ্গে  চল  আমরা   তোকে  নিয়ে  যাবো তার  কাছে । 
       শ্রীমতী  নায়কের  সঙ্গে  মিলনের  অভিলাষে  এতই  ব্যাকুল যে  তার  মন  আর
কিছুতেই  কোনো কাজেই মন লাগছে না , চোখের কাজল  পায়ে পড়েছে  ও  পায়ের আলতা  চোখের  কাজল  করেছে ,  পায়ের নুপুর  হাতে  পড়তে  যাচ্ছে  কিন্তু বার বার তার
হাত থেকে  নুপুর  গোলে  পরে  যাচ্ছে ।  

         তাই   শ্রীমতী   রাধা   বড় দুঃখ  প্রকাশ করে বলতে  লাগলো  নিজ সখীদের ,  আমার
প্রিয় সখী রে   আমি কি  শিশুকাল  হতে কৃষ্ণ ভজে  আমি কি এত  শুকায়ে  গেছি ।   শিশু 
কালে আমি জন্ম অন্ধ ছিলাম  আর আমার অন্নপ্রাশন এর  দিন  শ্যাম নাগর  তার  বাবা ও
মায়ের সঙ্গে  আমাদের বাড়ী  গিয়েছিল  সবার
চোখের আড়ালে  কৃষ্ণ আমার ঘরে  এসে  সে তার পদ্ম হস্ত  আমার চোখে  বুলিয়ে  দিয়ে বললো  হে  রাধে  তুমি সর্ব  প্রথমে  আমার  মুখ
দর্শন  করো  এবং  তোমার অন্ধত্ব  ঘুচাও  । আমি  সেই  শিশুকাল থেকে তাকে ভালবাসি 
সে ছাড়া  আর আমি  কিছুই জানি না  ।  

     সখী  বললো  হে  রাই সখী  তুমি তো  ভুল  পড়েছ  পায়ের নুপুর তুমি হাতে পড়েছ  সেই কারণেই  নুপুর হাতে বড় হচ্ছে , রাই বিনোদিনী
ও তাই  আর্বার দুল পড়েছে এক কানে ।   অন্য
কানে নেই  এবার  শ্রীমতী রাধা  সখী সনে  দ্রুত
চলতে লাগলো  শ্রী কৃষ্ণ দর্শনে ।  দেহের প্রতি
রাধার হুস নাই  গায়ের  ওরনা কাচুলি  শরীর হতে  খসে পড়ছে  কিন্তু  কারোর  তাতে লক্ষ
নাই ,  নায়কের সঙ্গে নাইকার  মিলনের  এতই
তীব্র অনুরাগ  আর  অধীরতা  ধৈরজ আর নাহি
মানে ।  সখী বাঁশি  কি বনে বাজে না  মনে  বাজে  সেই  বংশীর ধ্বনি অনুসারে  সেইদিক 
পানে  ছুটে  চললো ,  মধ্য রাত্রি  বারোটা  অন্ধকার  গভীর জঙ্গল  বাঘ  ভল্লুকের  ভয় 
পর্যন্ত  জয় করেছে তারা ও শ্রীমতী । অন্ধ কার

       সখী সনে এসে উপনীত হলো সেই  নিধুবনে
 এদিকে ওদিকে চাইতে লাগলো  কোথা  শ্যাম রায় ,  তারা  দেখলো  যে  মাধবী বীক্ষো  তলে  মুখ  নিচু করে  বসে অপেক্ষা  করছিল  শ্রীমতী
রাধার  জন্য   শ্যাম নাগর ।  যেই   মুখ  তুলে দেখলেন  কৃষ্ণ  সখী সনে  রাই  কিশোরীকে ,
দীর্ঘক্ষণ  নায়ক  নাইকা কে  না  দেখলে  যেমন
সেই  নায়কের  সেই  নাইকাকে  দেখার জন্য  তার  অন্তরে  দর্শনের  ভাব  উদ্দীপন  হয়  সে
ব্যাকুল চিত্ত হইয়া থাকে  ঠিক  তদ্রুপ  খুব   প্রফুল্ল  অন্তরে  ব্যাস্ত  ভাবে  বলে উঠলেন  ।


         রাই কি এলে ?   এসো  এসো  বিনোদিনী  রাধা  ,  তোমার  আমার  প্রাণ  এক  প্তেমেতেই  বাঁধা ।  এই  বলে  শ্যাম নাগর  শ্রীমতী  রাধারানী
কে  গাঢ়  আলিঙ্গন  করলো  বুকে  নিয়ে  শ্যাম নাগর    দীর্ঘ প্রতীক্ষার হলো অবসান ,  এই ভাবে  অভিসারে  মিলিত হলো   নায়িকা  শ্রীমতী  রাধা  নায়ক  কালোমনিক  শ্রী কৃষ্ণের 
সঙ্গে  মিলোননন্দে  কত  রসালাপ  করতে  লাগলেন  শ্রীমতী রাধা কৃষ্ণের সঙ্গে  নিজ  সখী
সনে ।  
           এরপরে  মহারাস  বর্ণিত  হইবে  পরবর্তীতে আমরা  সেই  মিলনে  যে  মহারস  আনন্দের  উৎকর্ষ  যা  অনন্ত সুখ  অন্তরে  অনুভব  লাভ হয়  সেটাই   মহারাস  বলে   মহাজ্ঞানী  শাস্ত্র কারগণ  ব্যাক্ত করে  বর্ণনা করেছেন ।  
    পর  ভাগে   কি জানি  এত কষ্ট করে লেখা আমার  সার্থক  হচ্ছে কি না  !   আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা ।  শুধুই লিখেই  যাচ্ছি,। ঈশ্বর
জানেন  । 
            জয় শ্রী রাধা কৃষ্ণ  ।   ক্রমশঃ ~  ৩ য়  ভাগ 
           শ্রী কৃষ্ণ দাস সঞ্জয় শাস্ত্রী, নবদ্বীপ ধাম  !!

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

sanjaykumar goswam104@gmail.com

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রঘুনাথ দাস গোস্বামী

Ramayon Ki Mhima