আসাম শিব সাগর ভ্রমণ কাহিনী ~

আসাম ভ্রমণ কাহিনী আসামে আমি অনেকবার অনেক দর্শনীয় স্থান  আমি ভ্রমণ  করেছি,  তেমনি এক জায়গা  আসামের  শিব সাগর ।  আমরা গৌহাটি  পল্টন বাজার থেকে  ভিডিও কোচ সুপার বাসের টিকিট  কাটলাম  পাশা পাশি  বেশ কিছু  টিকিট  কাউন্টার আছে,  সেখান থেকেই আসামের  সব জায়গায় যাবার  বাস পাওয়া যায়  মানে  সেখান থেকেই বাস ছারে  সব ।  আসামের রাজধানী  হলো ডিসপুর  গৌহাটি থেকে  প্রায়  ১০/ কিমি রাস্তা হবে  রাজ ভবন সাত তলা  পাহাড়ের উপরে  বহু দুর থেকে দেখতে পাওয়া যায়,  খুব সুন্দর ভাবে গোছানো  সেই বাজার  আমাদের বাস ছাড়ল  সকাল  ১১-৩০ মিনিটে  আর গৌহাটি থেকে  যোরহা ট  সাত থেকে আট  ঘণ্টা  সময়  লাগে ।   পাহাড়ের  ভিতর দিয়ে রাস্তা কেটে  বাস  চলেছে  কি ভাবে টার্নিং পয়েন্ট রাস্তা একের পর এক লরি ও বাস কে পাস কাটিয়ে  হাওয়ার  বেগে ছুটে চলেছে  একেবারে  পাহাড়ের উপরে   আবার  নিচে যখন নেমে  আসছে  তখন আরো ভালো লাগছে  কি সাংঘাতিক রিস্ক নিয়ে ওরা এই ভাবে বড় বড়  বাস গুলোকে  চালায় কি অভিজ্ঞতা  তাদের  হাত খুব পাকা আমার মনে হয়  আমাদের  বাংলার ড্রাইভাররা ওখানে গিয়ে এই ভাবে  পাহাড়ে বাস চালাতে পারবে না ।  তবে খুব  সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা  হচ্ছে আমার  এই সব  অনুভূতি গুলো  দেশ বিদেশ ভ্রমন না  করলে  হয়না  যাই বলুন,  খুব আনন্দ হচ্ছে  আবার খুব ভয়ও  পাচ্ছে ।  তবে একবার  নগাও তে দ্বারায়  ৩০/ মিনিট সময়  সবাই  যারযার মতন কিছু খেয়ে নেয়,  গৌহাটি থেকে নগাও সময় লাগে  ৩-৩০/ মিনিট   এখানে জায়গা বেশ সমতল ।  এটাও খুব  বড়  জেলা  সদর টাউন  আবার পাহাড়ি  পথ  কোনদিক দিয়ে  যে সময় কেটে গেলো  সেটা বোঝা গেলো না, আমাদের  বাস এসে  থামলো  দেওয়াল রোডে  আমরা নামলাম ।   এখানে একটু  দূরে  খুব সুন্দর একটি  রাধা কৃষ্ণের মন্দির আছে  তার পাশে   বয়েজ  অ্যান্ড  গার্লস  বেঙ্গলী  হাই স্কুল  । 
       আমরা গিয়ে উঠলাম  এক পরিচিত  দাদুর  বাড়ী  তার  নাম  নিতাই  ঘোষ  খুব  ধনী মানুষ  সে  বিরাট  এরিয়া নিয়ে  তার  বাড়ী  ভেতরে  পুকুর  ও বাগান  সব কিছুই  আছে ,  খুব  বড়  ব্যবসায়ী  তিনি ।  আমাদের  পেয়ে  তারা  খুব   খুশী  হলো  এবং  তার বাড়ী  কয়েক দিন  খুব  আনন্দেই  কাটল,  আজ  সকালে  নিতাই  দাদু   বললো  চলো  আজ সোমবার   আমরা সবাই  মিলে  আমাদের  এই  জোড়হা ট  থেকে  শিব সাগর  বেরিয়ে  আসি  ১০০/ কিলোমিটার  রাস্তা  হবে  ২-৩০ মিনিটে  পৌঁছে  যাবো   আর  সবাই  আমরা  রাজি  হয়ে  গেলাম ,  দাদুর  প্রাইভেট  কারে  আমরা  সবাই  রওনা দিলাম  শিব সাগর । 
       ৩- ঘণ্টা  সময়  লাগলো  আসতে  বিরাট  সেই  মন্দির  অনেক  বিঘা জমির উপর  তৈরি  এই  মন্দির,  বিরাট  এক সরোবর  তার  মধ্য খানে  বিরাজ  করছেন  এক  শিব  লিংগ   এর   নাম  হলো  শিব সাগর ।  কি অপূর্ব  খোচিত  সারা  মন্দিরের  গায়ে  সব  নক্সা  দেখে মনে  হলো  এ যেনো  বহু   প্রাচীন  হাজার হাজার বছর পূর্বে   এটি  নির্মাণ  হয়,  দাদু   বললো  হ্যাঁ  এই মন্দির  সেই  দ্বাপর যুগে  আসামের  বিরাট রাজা  এই মন্দির  নির্মাণ করেন  ।  শিবের কি মহিমা  এখনও  কিছুই তার  ধ্বংস  হয়  নি  ১০৮/ শিব লিংগ  আছে  চার পাশে  কি সুন্দর  সব ফুল গাছ  আবার নানান  ফলের  গাছ  আছে  এবং  এই  খানে  আসামী  ভাষায়  কথা  বলে সব   বাঙ্গালী  কম  আছে ,  আসামিরা  খুব সরল ও ভালো  মানুষ হয়ে  থাকে ।  
      আমাদের একটা করে অসমিস গামছা  পরিয়ে  দিল প্রধান  পুরোহিত  এটা নাকি  আসামের খুব সন্মান  জনক  বস্ত্র  আর কাচা  পান ও তাম্বুল  এই দিয়ে  রাষ্ট্রপ্রধানদের ও  সন্মান  জানানো  হয়ে  থাকে  আর এটা তারা  আগে  দেবে যাই হোক !  অনেক্ষন  ধরে  মন্দির সব  ঘুরে  ঘুরে  দর্শন  করলাম  আমরা  কিন্তু   খুব আনন্দ  অনুভব করলাম মনে ।  বেশ কিছুটা দূরে  পাহাড়ে ঘেরা  আর  পাহাড়ের  গা বেয়ে  সবুজ  রঙের  সারি সারি  অনেক  গাছ   পাহাড়ের  শোভা  যেনো  আরো  সুন্দর  দেখতে  লাগছে ।   আমার  কিন্তু  পাহাড়  ও  সাগর  খুব  প্রিয়  বিষয়  আর আমরা  বলতে   আমার বাবা ও মা  দাদু ও ঠাকুমা  আর  আসামিজ  তরুণ সৈকিয়া  আমাদের  ড্রাইভার   সে খুব  ভালো ছেলে  আমি তার সঙ্গে খুব  অসমিয়া ভাষায় কথা বলতাম,  শুনে  ও অবাক হয়ে আমাকে  জিজ্ঞেস করে  বললো  আপুনি  এনেকা ধুনিয়া   অখমিয়া ভাখা  কোর পোরা   হিখিলে ? ওরা স কে হ ও  ভাষা কে খ  উচ্চারণ করে  থাকে ।
      তবে খুব সহজ ভাষা শুনতে খুব ভালো লাগে  আমি  বললাম  অহমত ফুরীবলই আহিলে তো অলপ হিখিবই লাগে না ।  অর্থাৎ  তুমি এত সুন্দর অসমিয়া  ভাষা কি করে  শিখলে ?  আমি বললাম এই আসামে ঘুরতে  এলে  এই ভাষা আমায় শিখতে  হবে ভাই ।  এই  ভাবে  আমরা  শিব সাগর দর্শন করে আবার  ফিরে  এলাম  বাসায়  সবাই  ।  
আসামে দেখার জায়গা অনেক আছে  আবার  আমি  পরে লিখব ।  অবশ্যই পড়বেন  খুব ভালো  লাগবে । 
  আসাম ভ্রমণ কাহিনী  সমাপ্তি  !! 

    লেখক  কবি সঞ্জয় ~ 2/5/2023/  🙏🙏 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

sanjaykumar goswam104@gmail.com

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রঘুনাথ দাস গোস্বামী

Ramayon Ki Mhima